জাতীয় পার্টির (জাপা) কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে আয় ও ব্যয়ের মধ্যে একটি বিশাল ফারাক আছে; যা বাজেট ঘাটতি ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা।
আজ শনিবার রাজধানীর বনানীতে জাপার কার্যালয়ে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন জিএম কাদের। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাপার মহাসচিব ও সদস সদস্য (এমপি) মসিউর রহমান রাঙ্গা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা প্রমুখ।
তিনি বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকার এ যাবত কালের সবচেয়ে বড় বাজেট দিয়েছে। বাজেটের আকার ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এই বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। বাজেটের রাজস্ব ব্যয় এবং উন্নয়ন ব্যয় এ দু’টি অর্জন করা সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
জিএম কাদের বলেন, বাজেটে ঘাটতি বেশ বড় (১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা)। সরকারকে বড় অঙ্কের অর্থ রাজস্ব খাতে আয় করতে হবে। আবার নির্ধারিত খাতে বড় ধরনের ব্যয়ও করতে হবে। আয়ের প্রশ্নে আমরা চাই, অপেক্ষাকৃত অবস্থাপন্ন থেকে বেশি হারে রাজস্ব আদায়ের ব্যবস্থা ও স্বল্প আয়ের মানুষের ঘাড়ে কম দায় চাপানো হোক। অর্থাৎ প্রত্যক্ষ কর যেমন আয়কর থেকে যতোদূর সম্ভব রাজস্ব আদায় হোক ও পরোক্ষ কর (যেমন আমদানি শুল্ক ইত্যাদি) থেকে কম অংশ আয়ের ব্যবস্থা করা হোক।
তিনি বলেন, আয়কর থেকে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ও যে পদ্ধতির মাধ্যমে করা হবে বলা হয়েছে তা বর্তমান আয়কর বিভাগের অপর্যাপ্ত অবকাঠামো ও লোকবল ইত্যাদির কারণে প্রায় অসম্ভব, অনেক বিশেষজ্ঞের মতে। ফলে আয়কর থেকে মোট আদায়ের যে অংশ আশা করা যাচ্ছে তার থেকে অনেক কম আয় হবে। আশঙ্কা আছে। একই কথা মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাটের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে, আয় ও ব্যয়ের মধ্যে একটি বিশাল ফারাক আছে, যা বাজেট ঘাটতি ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। এ ঘাটতি মেটানোর জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে, ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ (৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি) + বিদেশি ঋণ ও সাহায্য (৬৩ হাজার ৮৪৮ কোটি) + ব্যাংকের বাইরে (সঞ্চয় পত্র ইত্যাদি) থেকে নেওয়া ঋণ (৩০ হাজার কোটি) টাকা।
ঘাটতি মেটাতে সরকার যখন আবার ব্যাংক ঋণের সাহায্য নেবে তা বিরাজমান সংকটকে আরও ঘনিভূত করতে পারে উল্লেখ করে কাদের বলেন, দেশে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সংকট বেকার সমস্যা। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে বাধা হোক এ ধরনের পদক্ষেপ যে কোনো ভাবেই পরিহার করতে হবে বলে মনে করি।